Header Ads Widget

Responsive Advertisement

সাম্প্রতিক খবর

6/recent/ticker-posts

মাদকে ভয়ঙ্কর হচ্ছে পুঠিয়ার এলাকা ভিত্তিক “কিশোর গ্রুপ ”

স্টাফ রিপোর্টার: দিনে দিনে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে রাজশাহীর পুঠিয়ার এলাকা ভিত্তিক একাধিক কিশোর গ্রুপ। এদের মধ্যে অধিকাংশ কিশোররা নগদ অর্থের লোভে সরাসরি মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীদের অভিযোগ চিহ্নিত কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে স্থানীয় বখাটে কিশোরদের মাধ্যমে মাদক সরবরাহ করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২টি স্থানে অর্ধশতাধিক গ্রুপ সরাসরি বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য বিক্রি করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী পুঠিয়া রাজপরগণায় ৫টি গ্রুপ মাদক বিক্রি করছে।

বেলপুকুর ইউনিয়নের রেলগেইট, ভরুয়াপাড়া, জামিরা, বানেশ্বর সরকারী কলেজমাঠ ও ট্রাফিকমোড় এলাকায় চারটি করে মাদক বিক্রির পয়েন্ট রয়েছে। শিবপুরহাট, বিড়ালদহ এলাকায় তিনটি, এছাড়া ঝলমলিয়া বাজার, সেনভাগ, ধোপাপাড়া, মোল্লাপাড়া ও সাধনপুরে পৃথক দুটি গ্রুপ মাদক বিক্রি করছে। এ সকল গ্রুপে প্রায় তিন শতাধিক মাদক ব্যবসায়ি রয়েছে। যার মধ্যে বেশীর ভাগই ১৪ থেকে ১৮ বছরের কিশোর।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে পুঠিয়া সদর এলাকার একজন মাদকাসক্ত পরিবারের সদস্য বলেন, রাজপরগনা ও এর আশেপাশের এলাকায় একজন জনপ্রতিনিধি ও দু’জন রাজনৈতিক নেতার মদদে কয়েকটি পয়েন্টে ইয়াবা, হেরোইন ও ফেনসিডিল প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে।

পুলিশ-প্রশাসন অবহিত হলেও রহস্যজনক কারণে এদের বিরুদ্ধে আইনী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়না। যার কারণে এই এলাকার অধিকাংশ যুবক এখন মাদকাসক্ত। অভিভাবকরা প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টা মাদক ব্যবসায়িদের হুমকিতে কোণঠাসা হয়ে আছেন।

বানেশ্বর বাজারের একাধিক দোকান মালিকরা বলেন, বানেশ্বর থেকে খুব কাছাকাছি ভারতীয় সীমান্ত। সে সুযোগে এই ইউনিয়নের তিনজন রাজনৈতিক নেতা দীর্ঘদিন থেকে পুরো উপজেলায় সকল প্রকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন। তারা বিগত দিনে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মদ বিক্রি করলেও গত কয়েক বছর থেকে হেরোইন, ইয়াবা ও ফেনসিডিলের কারবার করছে।

বর্তমানে ওই চক্রটি স্থানীয় বখাটে যুবকদের মোটা অংকের টাকার লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্রেতা হিসেবে ব্যবহার করছে। পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের লোকজন অল্প বয়সী কিশোরদের মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে সন্দেহ করছেন না। সে সুযোগে ওই চক্রটি খুব সহজেই চাহিদা অনুযায়ী মাদকদ্রব্য গুলো তাদের গন্তব্য পৌছে দিচ্ছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু বলেন, অসৎ সঙ্গীদের পাল্লায় পড়ে অনেক শিক্ষার্থীরা এখন মাদকে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। আর একজন মাদকাসক্ত সদস্য একটি পরিবারকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। এ সকল বিষয় তদারকি ও এলাকা মাদকমুক্ত করতে পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারকে আরও সচেতন হতে হবে। যুব সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে তাদের নিয়মিত খেলাধুলায় চর্চা করতে হবে। শিক্ষার্থী ও যুব সমাজের সুন্দর ভবিষ্যতের বিষয়টি বিবেচনা করে উপজেলা পরিষদের পক্ষ প্রায় বিভিন্ন এলাকায় সব সময় খেলাধুলার আয়োজন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (পুঠিয়া সার্কেল) কর্মকর্তা লুৎফর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলার কোথায় এবং কারা মাদকদ্রব্য বিক্রি করছে তাদের একটা নাম তালিকা দেন। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, থানার সকল পুলিশ সদস্যরা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত রেখেছেন। আমরা খোঁজ খবরের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করছি। আর শিশু-কিশোরদের ব্যবহার করে কেউ মাদক সরবরাহ করছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ