এইচ এম শাহনেওয়াজ: সম্প্রতি সারাদেশে মহাসড়কে ব্যাটারি চালিত চার্জার ভ্যান রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। সে মোতাবেক পুঠিয়া উপজেলার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ২৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চার্জার ভ্যান রিকশা চলাচল বন্ধে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন হাইওয়ে পুলিশ। এদিকে চার্জার ভ্যান রিকশা চালকরা দাবি করছেন এই মুহূর্তে মহাসড়কে চলাচল বন্ধ হলে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার অসহায় হয়ে পড়বেন।
উপজেলা রিক্সা-ভ্যান চালক সমিতির সভাপতি এমরান আলী বলেন, বর্তমানে আমাদের সমিতির সদস্যের সংখ্যা প্রায় ৬ শতাধিক। সমিতির বাহিরে আছেন আরও প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক। বর্তমানে দুই একটি ভ্যান রিক্সা বাদে সকল গাড়িই ব্যাটারী চালিত চার্জার সিস্টেম। উপজেলায় মহাসড়কের সাথে রয়েছে উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ বানেশ্বর বাজার ও ঝলমলিয়া বাজার। এই দু’টি বাজার ঘিরে অধিকাংশ ভ্যান-রিক্সা চালকরা পরিবার নিয়ে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকেন। এখন মহাসড়কে ব্যাটারি চালিত ভ্যানগুলো বন্ধ হলে অনেকেই বেকার হয়ে যাবেন। এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন, পা দিয়ে প্যাডেল চালিয়ে বেশির ভাগ চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না।
তসলিম উদ্দীন নামের একজন চার্জার ভ্যানচালক বলেন, আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৫জন। একমাত্র বাড়ির ভিটা আর এই ভ্যান ছাড়া আমার আয়ের কোনো পথ নেই। বাজারে এখন সকল কিছুর দাম বেশি। চার্জার ভ্যান চালিয়ে যে টাকা পাই তাতে খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে সংসার চলছে। আগে পায়ে ভ্যান চালাতে পারলেও এখন বয়সের কারণে আর পারি না। এই মুহুর্তে আমাদের সড়কে উঠতে না দিলে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। আলম হোসেন নামের অপর একজন ভ্যান চালক বলেন, গত মাসে দু’টি সমিতি থেকে সাপ্তাহিক কিস্তিতে ৩৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে এই ভ্যানটি কিনেছি। এর মধ্যে করোনার কারণে গত এক বছর থেকে সড়কে নিয়মিত ভাড়া তেমন পাইনা। দিনের পুরো সময়ে দু’চারটি ভাড়ার বেশি হয় না। যা আয় হয় এর বেশির ভাগ চলে যায় কিস্তি দিতে।
এ বিষয়ে পবা হাইওয়ে থানা (শিবপুর হাট) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, ব্যাটারি চালিত চার্জার ভ্যান রিক্সার গতিবেগ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরি কোনো ব্রেক নেই। সামনের চাকায় নামমাত্র ব্রেক আছে। যা চলাচলের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণে কোনো সুফল আসে না। যার কারণে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হয়। ইতিমধ্যে মহাসড়কে চার্জার ভ্যান-রিক্সা বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমরা গত দুই দিন থেকে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি ব্যাটারি চালিত ভ্যান রিক্সা চালকরা যেনো মহাসড়কে চলাচল না করেন। তারা যদি আইন ভেঙ্গে ভ্যান রিক্সা নিয়ে মহাসড়কে চলাচল করেন তবে আমরা ওই যানবাহনগুলো জব্দ করবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, মহাসড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে চার্জার ভ্যান রিক্সাগুলো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আমাদের সকলকেই আইন মেনে চলতে হবে। চালকরা মহাসড়ক বাদে সকল সড়ক গুলোতে চলাচল করতে পারবেন।
0 মন্তব্যসমূহ