নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর পুঠিয়া জোনাল অফিসের এজিএম (কম) আল ইমরান হোসাইন বলেন, উপজেলায় আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প ও কৃষি মিলে মোট ৭০ হাজার বিদুৎ গ্রাহক রয়েছেন। এ সকল গ্রাহকদের কাছে বর্তমানে বিদুৎ বিল বকেয়া ছিল প্রায় ৫ কোটি টাকা। গত কয়েকদিনে আদায় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। তবে বাকি দেড় কোটি টাকা আগামী দুই দিনে আদায় হবে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে বকেয়া আদায় করতে অফিসের লোকজন মাঠে নেমেছেন। যদি কোনো গ্রাহক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল না দেয় তবে তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।
তাছের উদ্দীন নামের একজন বিদ্যুৎ গ্রাহক বলেন, গত মে মাসের বিল হাতে পেয়েছিলাম জুনের ৬ তারিখে। আর বিল পরিশোধের শেষ তারিখ ছিল ১৪ জুন। ওই বিল নিধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করাও হয়। তবে এর সপ্তাহ না যেতেই মাত্রাতিরিক্ত টাকা উল্লেখ করে গত ২৬ তারিখে জুন মাসের বিল বাড়ি পৌছে দেয়া হয়। আর ওই বিল পরিশোধের শেষ তারিখ উল্লেখ করা হয় ২৮ জুন। জুন মাসের বাকি আরো দুইদিন। কিন্তু ২৯-৩০ জুন বিল দিলেও গ্রাহকদের গুনতে হবে জরিমানা। তিনি বলেন, বড় শিল্প কারখানা, অফিস গুলোতে লাখ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। আর ওই বকেয়ার টাকা পুরণ করতে সাধারণ গ্রাহকদের উপর জুলুম করছেন বিদ্যুৎ অফিস।
পৌরসভা এলাকার অপর একজন বিদ্যুৎ গ্রাহক জামরুল ইসলাম বলেন, আমরা খেটে খাওয়া লোক। গত এক বছর থেকে করোনার কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে কোনো মতে বেচে আছি। এরমধ্যে বিদ্যুৎ অফিস একই মাসে দুই বিল দিলো। তাও বিলগুলো বিগত দিনের চেয়ে অনেক বেশী টাকা খরচ দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, সব সময় আমাদের কাজ থাকেনা তাই নগদ টাকাও জমা থাকে না। এখন এই বিল না দিলে অফিসের লোকজন লাইন কেটে দিয়ে যাবে। আর ওই লাইন পুণঃসংযোগ নিতে গেলে অতিরিক্ত জরিমানার ৬০০ টাকার সাথে তাদের মিস্টি খাওয়ানোর টাকাও দিতে হয়।
অতিরিক্ত বিল বিড়াম্বনার শিকার আতাহার আলী নামের অপর একজন গ্রাহক বলেন, বিগত সময় আমাদের মিটারের বিল ৫০০ থেকে সাড়ে ৬০০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। অথচ জুন মাস শেষ হয়নি কিন্তু বিল এসেছে ১ হাজার ২২৩ টাকা। কিভাবে এতো টাকা বিল আসলো তা জানতে আজ অফিসে এসেছিলাম। কিন্তু অফিসের লোকজন বলেছেন, এখন জুন মাস বিলে উল্লেখিত পুরো টাকা দিয়ে দেন। আর অতিরিক্ত যে টাকা নেয়া হচ্ছে তা আগামী মাসের বিলের সাথে সমন্নয় করে দিবেন বলে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম ইয়াকুব আলী বলেন, এখন জুন ক্লোজিং চলছে। এর মধ্যে গ্রাহকদের কাছে আমাদের অনেক টাকা বকেয়া পড়ে আছে। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বকেয়ার টাকা পুরণ করতে না পারলে উপরে অনেক জবাব দিতে হয়। তাই বকেয়া আদায়ে আমাদের কিছু কৌশল গ্রহণ করতে হয়। যার কারণে গ্রাহকদের নিকট থেকে জুনের বিলও আদায় করা হচ্ছে। মাস শেষ না হতেই গ্রাহকদের নিকট থেকে দ্বিগুন বিল আদায় বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত বিল নেয়ার কোনো সিস্টেম নেই। তবে যদি কোনো গ্রাহক মনে করেন তাদের বিল মাত্রাতিরিক্ত তাহলে অফিসে আসলে ঠিক করে দেয়া হবে।
0 মন্তব্যসমূহ