Header Ads Widget

Responsive Advertisement

সাম্প্রতিক খবর

6/recent/ticker-posts

শিশুকে দিয়ে টোলের নামে চাঁদা আদায়!

স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুর: দুর্গাপুর উপজেলার মধ্যে এসে বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এতে ক্ষুব্ধ দুর্গাপুর উপজেলার প্রায় দশ হাজার শ্যালো ইঞ্জিন চালিত ভুটভুটি, অটোরিকশা, ট্রলি, কাঁকড়া, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালকরা।

প্রতিদিন দুর্গাপুর উপজেলার গোপালপাড়ায় সড়কে আদায় করা হয় তাহেরপুর পৌরসভার টোল। এতে ব্যবহার করা হচ্ছে শিশুদের। যে কোন ধরনের গাড়ি দেখলেই শিশুরা লাঠি উঁচিয়ে গাড়ি থামিয়ে টোল আদায় করছেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেও মারধরের শিকার হোন দুর্গাপুরের চালকরা। পুলিশ এবং প্রশাসনের সামনেই একটি সিন্ডিকেট তাহেরপুর পৌরসভার নামে নিয়মনীতি ও নির্দেশনা অমান্য করে টোলের নামে চাঁদা আদায় করে আসছে।

শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তাহেরপুর পৌরসভার টোল আদায় করছেন দুর্গাপুর উপজেলার গোপালপাড়া এলাকার ব্যস্ততম সড়কের পাশে বসে এরশাদ আলী নামের এক ব্যক্তি। তিনি তাহেরপুর পৌরসভার টোল আদায়কারী ইজারাদার। তার সাথে দুটি শিশু রয়েছেন। এরশাদ সড়কের পাশে বসে থাকলেও সড়কে দাঁড়িয়ে দুই শিশু গাড়ি দেখলেই হাতের লাঠি উঁচিয়ে থামিয়ে দিচ্ছেন। টাকা নেওয়া হয়ে গেলে তবে গাড়ি ছেড়ে দিচ্ছেন। এ সময় অনেক চালক টাকা নাই বললে তাঁর গাড়ি আটকিয়ে রাখাসহ লাঞ্চিত করা হচ্ছে।

গোপালপাড়া গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বাগমারা তাহেরপুর পৌরসভার টোল আদায় করা হয় দুর্গাপুরের গোপালপাড়ায়। এ নিয়ে তাহেরপুরের টোল আদায়কারীদের সাথে দুর্গাপুর উপজেলার গাড়ি চালকদের প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টি। অনেক সময় টোল আদায়ের সিন্ডিকেটের কাছে মারধরের শিকার হতে গাড়ির চালকদের।

দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন ধরনের গাড়ির মালিক ও চালকদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিনধরে তাহেরপুর পৌরসভার টোল দুর্গাপুর উপজেলায় মধ্যে আদায় করা হয়। এ উপজেলার প্রায় দশ হাজার হাজার শ্যালো ইঞ্জিন চালিত ভুটভুটি, অটোরিকশা, ট্রলি, কাঁকড়া, সিএনজি ও ব্যাটারী চালিত ভ্যান গাড়ি রয়েছে। এ সব গাড়ি প্রতিদিনই তাহেরপুর পৌরসভায় প্রবেশের আগেই দুর্গাপুরের মধ্যেই ২০টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। চাহিদা অনুসারে চাঁদা না দিলে বখাটে সিন্ডিকেট সদস্য কর্তৃক যানবাহন চালকদের ওপর নির্যাতন এবং মারধর শুরু করে। কখনো কখনো আটকায়ে রাখার ঘটনাও ঘটে। এ নিয়ে বিভিন্ন দরবারে অভিযোগ করেও এর থেকে মুক্তি হতে পারেনি উপজেলার কয়েক হাজার গাড়ির মালিক ও চালকরা।

তাহেরপুর পৌরসভার টোল আদায়কারী এরশাদ আলী বলেন, শুক্রবার তাহেরপুর বাজারে প্রচণ্ড ভিড়। এ জন্য দুর্গাপুরের ভিতরে গোপালপাড়ায় টোল আদায় করছি। হাতে লাঠি থাকলে গাড়ি থামাতে সুবিধা হয়। লাঠি দিয়ে গাড়ি ইশারা করলে, দূর থেকেই চালকরা বুঝতে পারেন। তিনি বলেন, এই শিশুদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। এরা গরিবের সন্তান। প্রতিদিন দুই চার-পয়সা ধরিয়ে দিলে তাদের উপকার হয়। এ সময় তিনি প্রতিবেদককে তাহেরপুর বাজারে তার সাথে দেখা করে চা খাওয়ার অনুরোধ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্গাপুরের কয়েকজন অটোচালক জানান, দুর্গাপুর উপজেলার ভিতরে থাকলেও বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভায় চাঁদা দিতে হয়। এটা নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলনেও আমাদের কান্না কেউ শুনে না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে তাহেরপুর পৌরসভার নামে তারা আমাদের মত নিরীহ মানুষের কাছে থেকে আদায় করে চলছে। টাকা দিতে না চাইলে আবার অপমান, অপদস্ত ও মারধরের শিকার হতে হয়।

এ বিষয়ে তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দেয়া হলে তিনি না ধরাতে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহসীন মৃধা বলেন, এ বিষয়ে আমি তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র মহোদয়ের সাথে কথা বলবো। তবে কেউ এখনও আমাকে এ বিষয়ে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে দুর্গাপুর উপজেলার ভিতরে যদি তাহেরপুর পৌরসভার টোল আদায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ