বুধবার বিকেলে পুঠিয়া-তাহেরপুর সড়কের কার্তিকপাড়া বাজারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মানবন্ধন ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্ছু, শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন মুকুল, উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রহিদুল ইসলাম, শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আব্দুর রহিম মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক শুকুর আলী প্রমুখ।
বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল বলেন, এই সড়কে প্রায় দেড় হাজার বিভিন্ন গাছপালা রয়েছে। যার বেশীর ভাগ গাছ গুলো শতবর্ষী। সড়কের ধারে এতো গাছপালা এক সাথে কাটা হলে পরিবেশের ভারসাম্য নস্ট হবে। শতশত পাখির বাসা ভাঙ্গা পড়বে। বাসায় থাকা ডিম ও ছোট বাচ্চা গুলো মারা যাবে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়বে হাজারো পাখি। তিনি বলেন, এলাকাবাসী ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির দাবীর বিষয়টি বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শতবর্ষী গাছগুলো কাটার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু বলেন, পুঠিয়া-তাহেরপুর সড়কের গাছ গুলো শতবর্ষের ঐতিহ্য। এই গাছ গুলো রেখে রাস্তা সম্প্রসারণ করা সম্ভব। ইতিমধ্যে সড়কের অবকাঠামোর কাজ প্রায় শেষের পথে। কিন্তু সড়কের সাথে ভালো গাছগুলো কাটার কোনো প্রয়োজন নেই। সড়কের দুই পাশের গাছ গুলো শুধু ছায়া দেয় না। এটা আমাদের শতবর্ষের ইতিহাস বহন করে। তিনি বলেন, পরিবেশ বাঁচিয়ে এই সড়কের উন্নয়ন সম্ভব। আমরা এখন সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোর কাছে জানাতে চাই। শতবর্ষী গাছ রক্ষায় প্রয়োজনে বৃহৎ আন্দোলন করা হবে।
জানা গেছে, পুঠিয়া থেকে তাহেরপুর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় তিন হাজার গাছপালা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় চার শতাধিক গাছ রয়েছে শতবর্ষী। আর এই গাছগুলো জেলা পরিষদ, বন বিভাগ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিনে। এদিকে চলতি বছরের শুরু থেকে পুঠিয়া তাহেরপুর সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সম্প্রতি প্রতিটি দপ্তর তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সড়কের দুই পাশের গাছপালা চিহ্ণিত করেছেন। সেই সাথে সকল গাছের মূল্য নির্ধারণ করতে বন বিভাগকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বন বিভাগ গাছের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার পর নিলামে বিক্রি করা হবে।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথের রাজশাহী বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাস্মদ শামসুজোহা বলেন, সড়কের ধারে গাছগুলো নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে আমরা মহাসমস্যায় আছি। এখন পুঠিয়া-তাহেরপর সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে। সড়কের সাথে কিছু গাছের কারণে কাজ করা অনেক জটিলতা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই সড়কের গাছ গুলো সড়ক ও জনপথের একার নয়। এখানে জেলা পরিষদ ও বন বিভাগেরও গাছ রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের গাছগুলো এই মুহুর্তে নিলামে বিক্রির প্রক্রীয়াধিন।
রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নিয়ামুর রহমান বলেন, পুঠিয়া তাহেরপুর সড়কের গাছ বিক্রির দ্বায়িত্ব আমাদের নয়, সড়ক ও জনপথের। আমরা শুধু গাছের মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে তদারকি করছি। ইতিমধ্যে মূল্য নির্ধারণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সড়ক ও জনপদ, জেলা পরিষদের সাথে বন বিভাগের প্রায় ৫ শতাধিক গাছ কাটা পক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি কাগজপত্র না দেখে এই মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না।
0 মন্তব্যসমূহ