তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে নারয়ণপুরের মইদুল দালাল, ঢাকা থেকে আগত ছলিম দালল, চট্টগ্রাম থেকে আগত মোশাররফ দালাল, আলিপুরের শফিকুল ও জাহাঙ্গীর, কিসমত গনকৌড়ের আমিন, কয়ামাজপুরের জাহাঙ্গীর, চৌপুকুরিয়ার মান্নান।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সন্ধ্যা হলেই সঙ্গবদ্ধ হয়ে প্রশাসনিক কিছু অসাধু-কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে পুকুর খননের রেট নির্ধারণ করেন। বিঘাপ্রতি ৩ থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত ম্যানেজ রেট থাকে। তাঁরা বিভিন্ন কৌশলে তাদের নিজ স্বার্থ রক্ষা করে চালাচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম।
প্রশাসনের সাথে সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নাম ব্যাবহার করেন হর হামেশাই এমনকি তাঁদের বিক্রয়ের তালিকায় সাংবাদিক মহলও । পুকুর মালিকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকার সাথে বিভিন্ন কূটবুদ্ধি দিয়ে অসহায় কৃষকদের বিপদে ফেলেন। দুর্গাপুর জুড়ে আলোচনার শীর্ষে মইদুল, সোলিম, মোশাররফ এই তিন দালাল।
হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন মইদুল। পূর্ব থেকে আনাগোনা রয়েছে অপরাধ জগতে। বিভিন্ন মামলার আসামীও তিনি। গত দুই তিন বছরে উপজেলার বিভিন্ন বিলে আবাদি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে পুকুর খননের নামে পুকুর মালিকদের কাছ থেকে হাতিয়েছেন প্রায় কোটি টাকা। চারদলীয় জোট সরকারের সময় যুবদলের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিলো।
বর্তমানে সরকারের টানা তিন বারের মেয়াদে খোলোস পাল্টে এখন হয়েছেন যুবলীগের নেতা। আর এই প্রভাবকেই কাজে লাগিয়ে বনে গেছেন টাকার কুমির। অর্ধকোটি টাকা ব্যায়ে নিজ গ্রাম নারায়ণপুরে জুড়েছেন আলিশান বাড়ি। কিভাবে তিনি এতো টাকার মালিক? প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। এলাকাবাসী বলেন, তিনি থানায় যাতায়াত করেন নিয়মিত হামলা মামলার ভয় দেখান কিছু বলতে শাহস হয়না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় নাই আমার হাতে। এমনটাই বলেন খোলোস পাল্টানো সেই জমি খেকো মইদুল।
আরেক দালাল ঢাকার আমিন বাজার থেকে আগত সোলিম, নিজ কূটবুদ্ধি কাজে লাগিয়ে ড্রাইভার থেকে হয়েছেন কোটিপতি তার ব্যাবসা থানার গন্ডি ছাড়িয়েছে। বিভিন্ন দালাল তার আন্ডারে কাজ করে অপাতত দৃষ্টিতে মনে দালালির কোম্পানী। তার নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক জিডি রয়েছে। কখনো সাংবাদিকের মুখোমুখি হলেই বিভিন্ন হুমকি দিয়ে সত্য প্রকাশে ব্যর্থ চেষ্টা করতে থাকেন। এবিষয়ে তিনি জানান, যারা নেতাদের নাম ভাঙ্গাচ্ছেন, তাদের ধরেন? আমার গাড়ি চলছে না।
চট্টগ্রাম থেকে আগত দালাল মোশাররফ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নাম ও প্রশাসনের নাম ব্যাবহার করে প্রতারণার জাল বিছিয়েছেন পুরো দুর্গাপুর জুড়ে। এবিষয়ে তিনি বলেন, আমি এসবের সাথে জড়িত না , আমি এলাকায় নাই।
নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত এই দালল শ্রেণী। তিন ফসলী জমি, রাস্তা, কারেন্টের পোল,ট্রান্সমিটার, ডিপ লাইন সবকিছু ধংস করার উৎসবে মেতেছে তাঁরা। নিজের মতো ম্যানেজের আইন তৈরি করে শস্য শ্যামল দুর্গাপুরকে বদ্ধ ডুবন্ত জলাভূমিতে পরিণত করার প্রধান করিকর তারা। কিন্তু আইন রয়েছে আইনের জায়গায় বাস্তবে বুক ফুলিয়ে প্রশাসনের সামনেই ঘুরছে তারা কাঁচা টাকা ছিটিয়ে তৈরি করেছে নিজেদের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বলয়। সেখানে রয়েছে প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তা, কথিত সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতারা। সাধারণ মানুষ বলছে এরাই যতো সমস্যার মুল এদের জন্যে দুর্গাপুরের আজ এই অবস্থা দ্রুতই এই দালালদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।
এবিষয়ে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাশমত আলী জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় উপজেলা ভূমি সেক্টর দেখবে। ফসলী জমি নষ্ট করে পুকুর খননের বিষয়টিও তাঁরাই দেখবে। এক্ষেত্রে কেউ পুলিশ প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে পুকুর খননের চেষ্টা করলে থানায় জানাবেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মহসিন মৃধা জানান, প্রশাসনের নাম ব্যাবহার করে কেউ অপরাধ সংগঠিত করতে চাইলে আমাদের জানান। আমরাই ব্যবস্থা নিবো তাদের বিরুদ্ধে। আর অবৈধ পুকুর খননে সহায়তাকারী ভেকু দালালদের বিরুদ্ধে দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
0 মন্তব্যসমূহ