Header Ads Widget

Responsive Advertisement

সাম্প্রতিক খবর

6/recent/ticker-posts

দুর্গাপুরে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারে হামলার ঘটনায় আসামিদের গ্রেফতার দাবি মুক্তিযোদ্ধাদের

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী দুর্গাপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম হিরু মাস্টারকে লাঞ্ছিত-করে তার পরিবারে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদের সংবাদ সম্মেলন করেছেন দুর্গাপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা। আজ বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দুর্গাপুর প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লাঞ্ছিতের শিকার আ,ও,ম নুরুল আলম হিরু মাস্টার। হিরু মাস্টার একজন মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক, স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রতিষ্ঠাতা দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের শাহ-আলম, রাজীব, মমিন, হারুন, মামুন, হাসান, মইদুল, আজিজ, নিলয় ও শাকিল পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সন্ত্রাসী কায়দায় অতর্কিত ভাবে মুক্তিযোদ্ধা নরুল আলম হিরু মাস্টারের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় বাড়িতে থাকা তার ছোট ছেলে শফিউল আলম লিখন (৪০)বাধা দিতে গেলে শাহ আলমের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে লিখনের বাম পায়ের হাঁটুর মালয় ভেঙে দেয়। সেই সাথে এলোপাতাড়িভাবে ব্যাপক মারপিট করলে সে জ্ঞানশূন্য অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

এসময় অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম হিরু ও তার স্ত্রী হাওয়া বেগম তাদের বাধা দিতে গেলে তাদেরকে লাঞ্ছিত করে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। সেই সাথে তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে অকথ্য-ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। পরবর্তিতে তারা সকল আসবাবপত্র ভাঙচুর করে বাড়িতে রক্ষিত ১১ ভরি সোনার গহনা এবং পুকুরের মাছ বিক্রি করা জমানো নগদ ৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা লুট করে তান্ডব করতে থাকে। এক পর্যায়ে বাড়িঘর পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেয় সন্ত্রাসীরা।

এমত-অবস্থা দুর্গাপুর থানার পুলিশ সংবাদ পেয়ে সেখানে উপস্থিত হলে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তিতে পুলিশের সহায়তায় আহত লিখনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হায়। বর্তমানে সে মুমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালের ৩১ নং ওয়ার্ডের ৪০ নং মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষিত বেডে মত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

এই বিষয়ে সেই দিন রাতে দুর্গাপুর থানায় ১২জনকে আসামী করে একটি মামলা করেন মুক্তিযোদ্ধা হিরু মাস্টার মামলা নং ১১/৩১। এদিকে এঘটনায় পরবর্তীতে আসামীরা মুক্তিযোদ্ধা দুই ছেলে ও নাতিসহ কয়েকজনকে আসামী করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে হামলা-কারিদের করা মামলায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আদালত থেকে জামিন প্রার্থনা করলে মাননীয় আদালত তাদের জমিন মুঞ্জুর করেন।

জামিন প্রাপ্ত হয়ে রাজশাহী আদালত চত্বরের প্রধান গেটে আশা-মাত্র আসামী রাজিব, মামুন,জনি,শাহআলম,মহিদুলসহ আরো অনেকে পুর্ন-রায় সন্ত্রাসী কায়দায় ঘিরে ধরে। এসময় মুক্তিযোদ্ধার বড় ছেলে লিটন প্রাণভয়ে দৌড়ে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন।

কিন্তু সাথে থাকা জামিন প্রাপ্ত আসামী আসরাফুল ও মামুনকে জোরপূর্বক সেখান থেকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে তাদেরকে ব্যাপক মারপিট করে। সেই সাথে আশরাফুলের হাতপা ভেঙে রাস্তায় ফেলে দিয়ে যায়। এসময় পথচারীদের সাহায্যে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

৩১ নং ওয়ার্ডে মৃত্যর সাথে পাঞ্জা লড়লেও বুধবার তাকে হাসপাতাল থেকে অপশক্তির বলে তাকে রিলিজ দেয়া হয়। এইসকল ঘটনার পর আসামীরা সার্বক্ষনিক মুক্তিযোদ্ধা  নুরুল আলম হিরু মাস্টারকে ও তার পরিবারের লোকজনকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। যার ফলে তিনিসহ তার ছেলেরা বাড়ি ছাড়া হয়ে জীবন যাপন করছে।

বর্তমানে তিনিসহ পরিবারের সদস্যরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতা ভুগচ্ছেন। তিনি একজন বৃদ্ধ অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সাংবাদিকদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের  নিকটে তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে আকুল আবেদন জানান।

এসময় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল মান্নান ফিরোজ,হযরত আলী, ইনছান আলী,নাজিমুদ্দিন, সমসের আলী,পরমেশ,মকছেদ আলী,তোফায়েল,আবুল কাশেম প্রমুখ। এসময় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা হামলাকারী আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবী জানান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ