উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর নতুন ও পুরাতন মিলে প্রায় ৯শ’ হেক্টোর জমিতে আম বাগান রয়েছে। গত মৌসুমে এই এলাকায় আমের উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৫০ মে. টন। এবং উৎপাদন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মে. টন আম।
এ বছর প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মে. টন আম উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অপরদিকে বাজার ভালো থাকায় প্রতিবছর লিচুর বাগান রোপণে আগ্রহ হচ্ছেন অনেক চাষিরা। এই এলাকায় নতুন পুরোনো মিলে প্রায় একশ’ হেক্টোর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করলে লিচুতে বাম্পার ফলন আশা করছেন চাষিরা।
জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর থেকে এই অঞ্চলে বৈরি আবহাওয়ার বিরাজ করায় চাষিরা বিভিন্ন ধান-গমসহ ফসল উৎপাদন করে লোকসানের মুখে পড়ছেন। যার কারণে তারা স্বল্প খরচে অধিক লাভের আশায় ফসলি জমি গুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির আম ও লিচুর গাছ রোপণ করছেন। গত বছর পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ বছর বেশির ভাগ আম ও লিচু বাগানে মুকুল দেখা দেয়।
কিন্তু মৌসুমের শুরু থেকে কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অনেক মুকুল ও কুঁড়ি গুলো শুকিয়ে ঝড়ে যায়। তার ওপর এবার মাত্রাতিরক্ত তাপদাহ হওয়ায় বাগান মালিকরা ব্যাপক লোকসানের মুখে রয়েছেন। অনেক বাগান গুলোতে পচন রোগের প্রভাব দেখা দিয়েছে। তীব্র তাপদাহে লিচুর ওপরিভাগের অংশ পুড়ে ও ফেটে যাচ্ছে। চাষিরা ফেটে যাওয়া ও পচন রোধে বিভিন্ন প্রতিরোধক ব্যবহার করেও পর্যাপ্ত সুফল পাচ্ছে না। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেখা দেয়ায় বাগান মালিকরা চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
উপজেলায় কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, আম-লিচু সাধারণত দু’টি কারণে পচন ধরতে পারে। একটি হচ্ছে ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোয়ার কারণে বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। অপরটি হলো আম ও লিচু ছিদ্রকারী মাছি পোকার কারণে হতে পারে। আর সূর্যের তাপ রোধে লিচুর গাছে নেট বা জাল ব্যবহার অনেক অংশে প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
বাগান মালিক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, এবার বৃষ্টিপাত হয়নি। তার ওপর এখন অনেক তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। এতে আম ও লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। যার কারণে এবার ব্যবসায়ীরা আগাম আম ও লিচুর বাগান কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুনাহার ভূইয়া বলেন, বৈরি আবহাওয়ার কারণে মৌসুমের শুরু থেকে এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম। যার কারণে তাপমাত্রাও অনেক বেশি হয়েছে। এতে করে আম-লিচুসহ বিভিন্ন ফসলের কিছুটা ক্ষয়ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। বাগান গুলোতে রোগ-বালাই কমাতে সঠিক মাত্রায় ¯েপ্র করলে পচন ও পোকা-মাকড় থেকে অনেক অংশে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
0 মন্তব্যসমূহ