কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, শিক্ষার ধারাবাহিকতা রাখতে শিগগির আইনি জটিলতা নিরসন করে। শূন্যপদগুলাে পূরণ করা হােক।
তানভীর হাসান নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, কলেজের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলাের শিক্ষকেরা অবসরে চলে গেছেন। বর্তমানে ওই বিষয়গুলােতে নামমাত্র পাঠদান চলছে।
অবস্থায় শিগগির শুন্যপদগুলােতে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়ােগের দাবি করেছেন কলেজের একাধিক শিক্ষক। শিক্ষশূন্যতার দায় শিক্ষার্থীরা কেন বহন করবে—এ প্রশ্ন তােলেন তাঁরা।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে সরকার সারা দেশের উপজেলা পর্যায়ে একটি করে কলেজ জাতীয়করণের ঘােষণা দেয়। সেই তালিকায় নাম আসে পুঠিয়া লস্করপুর ডিগ্রি কলেজের। বিধি অনুযায়ী সব কাগজপত্র জমাও করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে কলেজের নিয়ােগ স্থগিতসহ নানা বিধিনির্দেশনা আসে। এর কয়েক দিনের মধ্যেই তৎকালীন সাংসদ আব্দুল ওয়াদুদ দারা’র সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষেত্র মনােমালিন্য দেখা দেয়। এরপর ওই সাংসদ লস্করপুর ডিগ্রি কলেজের নাম জাতীয়করণ থেকে বাদ দিয়ে বানেশ্বর কলেজ অন্তর্ভুক্ত করতে মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লস্করপুর ডিগ্রি কলেজকে বাদ দিয়ে বানেশ্বর কলেজকে জাতীয়করণের নতুন সংশােধিত তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়। এরপর লস্করপুর কলেজকে জাতীয়করণ করতে আদালতে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। বর্তমানে মামলা দুটি চলমান।
লস্করপুর ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাসির উদ্দীন বলেন, এই কলেজকে জাতীয়করণ তালিকায় পুনর্বহাল করতে গত ২০১৭ সালে কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম তাজুল ও নজের আলী নামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক হাইকোর্টে পৃথক দুটি মামলা করেন। সে সময় আদালত তিন মাসের মধ্যে এই কলেজকে জাতীয়করণ করতে নির্দেশনা দেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ওই রায়ের বিপরীতে আপিল করেছে, যা এখনাে বিচারাধীন।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আরও বলেন, আইনি জটিলতা থাকায় ২০১৮ সালে কলেজের অধ্যক্ষের পদ শূন্য হয়। সেই সঙ্গে কলেজের হিসাববিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান, রসায়ন পদের শিক্ষকেরা অবসরে গেছেন। সেই সঙ্গে একজন লাইব্রেরিয়ান ও একজন অফিস সহকারীর পদও শূন্য। আগামী বছরের শুরুতে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য হবে। বর্তমানে এই কলেজের বিভিন্ন শাখায় মােট ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে শিক্ষকদের
শূন্যপদগুলাে এই মুহূর্তে পূরণ করা যাচ্ছে না। ফলে সামনের দিনে কলেজে পাঠদানে চরম ব্যাঘাত ঘটবে।
এ ব্যাপারে কলেজের পরিচালনা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল হাই মােহাম্মদ আনাছ বলেন, অধ্যক্ষসহ গুরুতপূর্ণ বিভাগগুলাের শিক্ষক না থাকলে পাঠদানে কিছু সমস্যা হতে পারে। কিন্তু আইনি কিছু জটিলতা থাকার ফলে শূন্যপদগুলাে এই মুহূর্তে পূরণ করা যাচ্ছে না। তবে আশা করা যাচ্ছে অচিরেই এই জটিলতার নিরসন হবে।
0 মন্তব্যসমূহ